ইসলাম ডেস্ক :
হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ মহামানব। তাঁর গুণাবলীতে আলোকিত বিশ্ব। এসব গুণাবলীর মধ্যে তাঁর দৈহিক ও চারিত্রিক গুণাবলীগুলো বিদ্যমান। তা থেকে কিছু তুলে ধরা হলো-
১. চেহারা সৌন্দর্য
হজরত বারাআ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেহারা ছিল মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সুন্দর এবং তিনি ছিলেন সর্বোত্তম আখলাকের (চরিত্রের) অধিকারী। তিনি বেশি লম্বাও ছিলেন না এবং বেঁটেও ছিলেন না। (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)
হজরত আবু ইসহাক তাবিঈ রাহমাতুল্লাহি আলঅইহি বর্ণনা করেছেন, হজরত বারাআকে জিজ্ঞাসা করা হলো- নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চেহারা মোবারক কি তলোয়ারের মত ছিল? তিনি বললেন না, বরং চাঁদের ন্যায় ছিল।’ (বুখারি)
২. দৈহিক সৌন্দর্য
হজরত বারাআ ইবনে আজিব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাঝারি গড়নের ছিলেন। তাঁর উভয়ে কাঁধের মধ্যস্থল প্রশস্ত ছিল। তাঁর মাথার চুল দুই কানের লতি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। আমি তাঁকে লাল ডোরাকাটা জোড় চাদর পরা অবস্থায় দেখেছি। তাঁর চেয়ে বেশি সুন্দর আমি কখনো কাউকে দেখিনি। হজরত ইউসুফ ইবনু আবু ইসহাক তাঁর বাবা থেকে হাদিস বর্ণনায় বলেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাথার চুল কাঁধ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।’ (বুখারি)
৩. বিশ্বনবির দেহের গঠন
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আহু বর্ণনা করেন, আমি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাতের তালুর চেয়ে মোলায়েম কোনো নরম ও গরদকেও স্পর্শ করিনি। আর নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শরীরের সুঘ্রাণ অপেক্ষা অধিক সুঘ্রাণ আমি কখনো পাইনি।’ (বুখারি ও মুসলিম)
৪. লজ্জাশীলতা
হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গৃহবাসিনী পর্দানশীন কুমারীদের চেয়েও বেশি লজ্জাশীল ছিলেন। নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোনো কিছু অপছন্দ করতেন তখন তা তাঁর চেহারায় বুঝা যেত।’ (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)
৫. রুচিশীলতা
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো কোন খাদ্যকে মন্দ বলতেন না। রুচি হলে তিনি খেতেন; আর রুটি না হলে বাদ দিতেন (খাওয়া থেকে বিরত থাকতেন)।’ (বুখারি, মুসলিম)
৬. কথা বলার ধরন
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনভাবে কথা বলতেন যে, কোন গণনাকারী গুণতে চাইলে তাঁর কথাগুলো গণনা করতে পারতেন।’ (বুখারি)
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা আরও বর্ণনা করেছেন, তুমি অমুকের অবস্থা দেখে কি অবাক হও না? তিনি এসে আমার হুজরার পাশে বসে আমাকে শুনিয়ে হাদিস বর্ণনা করেন। আমি তখন নামাজে ছিলাম। আমার নামাজ শেষ হবার আগেই তিনি উঠে চলে যান। যদি আমি তাকে পেতাম তবে আমি অবশ্যই তাকে সতর্ক করে দিতাম যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের মত দ্রুততার সঙ্গে কথা বলতেন না।‘ (বুখারি, মুসলিম)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী নিজেদের জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি বেশি বেশি দরূদ পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।