কুমিল্লায় ঝুকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান, ভেঙ্গে পড়লো ছাদের ঢালাই, আতংকে শিক্ষার্থীরা

আরিফ গাজী।।

কুমিল্লার মুরাদনগরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ন ও ঝুকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান, ক্লাশে বিরতীর ফাঁকে ভেঙ্গে পড়লো ছাদের ঢালাই। অল্পের জন্য প্রাণে বাচলো ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা।

এঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পুস্করিনীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ঘটনার সময় শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষের বাইরে থাকলেও এখন চোখেমুখে আতংক নিয়ে স্কুলে এসে ক্লাস করছে তারা।

জানা যায়, শ্রেণীকক্ষ সংকট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালিয়ে আসছে পুস্করীনিরপাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণীকক্ষের প্রয়োজন হলেও জরাজীর্ণ ভবনের ৩টিসহ মোট ৪টি কক্ষে গাদাগাদি করে বসিয়ে চলে পাঠদান কার্যক্রম। জরাজীর্ণ ভবনে প্রতিনিয়ত চোখে মুখে আতংক নিয়ে প্রতিদিন ক্লাশ করছে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়টিতে দ্রুত নতুন একটি ভবন তৈরীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ঝুকিমুক্ত পাঠদান করার জন্য কতৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান স্থানীয় অভিভাবকরা।

বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সবুজ মিয়া বলেন, আমার ছেলেডা যেই ক্লাসে বইসা পড়ালেখা করে সেই ক্লাসের নাকি ছাদ ভাইঙ্গা পড়ছে। আল্লায় বাচাঁইছে আমার পোলাডারে। লেখাপড়া করতো গিয়া যদি স্কুলে ছাদ ভাইঙ্গা পোলাপান মারা যায় তাহলে কেমনে হবে। সরকারী একটা ইস্কুলের যদি এই অবস্থা হয়।

আরেক অভিভাবক মির্জা হোসেন কুমিল্লাএসডিনিউজ কে বলেন, ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত আতংক থাকি কখন কি হয়। আমরা এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করার জন্য কতৃপক্ষের প্রতি বিনীত আবেদন করছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাঃ কোহিনুর আক্তার বলেন, এই বিদ্যালয়টিতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত মোট ২১৮জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শ্রেণিকক্ষ সংকটে আমরা সঠিকভাবে পাঠদান করাতে পারছি না। আমাদের বর্তমানে চারটি ক্লাশরুমের মধ্যে ৩টি ক্লাশরুমই হলো ঝুকিপূর্ণ ভবনটিতে। জরাজীর্ণ ভবনটিতে প্রতিনিয়ত চরম উৎকন্ঠা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা ক্লাশ করছেন। আমাদের বিদ্যালয়ের দুইপাশে বাউন্ডারী দেয়াল নেই, এবং দুইপাশে দুটি পুকুর থাকায় মাঝে মাঝে ছাত্র-ছাত্রীরা খেলাধূলা করতে গিয়েও পুকুরে পড়ে যায়। বিদ্যালয়ে দপ্তরি না থাকায় আমরা অনেক কাজকর্ম করতে পারছি না।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো: সেলিম সরকার বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অনেকবার উপজেলায় আবেদন করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কয়েকদিন পূর্বে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষের ছাদ ও ভীমের অনেককাংশ ভেঙ্গে পড়ে। তখন ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে না থাকায় বড় ধরনের দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা হয়েছে। এখন অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি নতুন ভবন করা না হলে এই গ্রামের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোটাই ভেঙ্গে পড়বে।

বাঙ্গরা ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা অফিসার আনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, ভবনটির ছাদের ভীম ভেঙ্গে পড়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভবনটি পরীক্ষা করার জন্য ইঞ্জিনিয়ার অফিসকে চিঠি দিতে বলা হয়েছে।

মুরাদনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফওজিয়া আকতার বলেন, পুস্করিনীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবনের জন্য অধিদপ্তরে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি নতুন ভবনের অনুমোদন পাওয়া যাবে।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
error: ধন্যবাদ!