মোঃ জয়নাল আবেদীন জয় :
সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতি (কভিড ১৯) করোনাভাইরাস। এর থেকে রক্ষা পায়নি বাংলাদেশও। এ মহামারী ভাইরাসের কবল থেকে লালমাই উপজেলার মানুষকে রক্ষা করতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত ছুঁটে বেড়াচ্ছেন ইউএনও কে এম ইয়াসির আরাফাত।
তিনি কখনও ছুটছেন জনসাধারণকে সচেতন করতে। কখনও ছুটছেন দরিদ্র অসহায় মানুষের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে। আবার কখনও ছুটে যাচ্ছেন বিভিন্ন হাট-বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজার মনিটরিং করতে। ইউএনও’র এ নিরন্তন ছুটে চলা শুধু মানুষকে একটু সেবা দেয়া।
ইউএনও ইয়াসির আরাফাত যেখানে অনিয়ম-অসঙ্গতি, সেখানে তিনি দ্রুত ছুটে যাচ্ছেন।
সার্বক্ষণিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও মুঠোফোনের মাধ্যমে গোটা উপজেলার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। সরকারি বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা ও বিজ্ঞপ্তি ফেসবুকের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক লোকজনকে জানিয়ে দিচ্ছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে মানুষকে ঘরে রাখতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। ইউএনও’র এসব ইতিবাচক কর্মকান্ড উপজেলার সাধারণ মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।
দূরন্ত ছুটে চলা, অবিরাম জীবনের অর্থ খুঁজে ফেরা এই মানুষটি নিজেও জানেন প্রাণঘাতি নোবেল করোনা ভাইরাস কতটা ভয়ংকর। তবুও ভয়কে জয় করে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে এবং সচেতন করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। ইউএনওর অক্লান্ত পরিশ্রমে বাড়ছে উপজেলার সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা।
তবে তিনি অনেকটা অসহায়ত্বও প্রকাশ করেছেন।
ইউএনও ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘করোনা সম্পর্কে মানুষকে বোঝাতে বোঝাতে এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। মানুষ কথা শুনছেন না। সরকারি নির্দেশনা মানছেন না। দেখা গেছে, স্পর্টে গিয়ে সচেতন করেছি ও বুঝিয়েছি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর যা তাই। আর কত বুঝালে তাদের মাঝে শুভবুদ্ধির উদয় হবে। আমি, এসিল্যান্ড এবং ওসি সাহেব নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে করোনা থেকে রক্ষা করতে দিনরাত পরিশ্রম করছি। মানুষ আমাদের কষ্টের মূল্য দিচ্ছে না। মানুষ নিজেরা সচেতন না হলে আমাদের পক্ষে গোটা উপজেলা কি ঠিক রাখা সম্ভব?
তিনি আরো বলেন, ‘তবে লালমাই উপজেলায় এখন পর্যন্ত কোন করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। তাই সকলের কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ দয়া করে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। নিজে বাঁচুন অন্যকে বাঁচতে সহায়তা করুন।’
উল্লেখ্য, উপজেলায় করোনায় কর্মহীন আর্থিক সংকটে পড়া মধ্যবিত্তদের সহায়তায় হটলাইন (০১৭২৭-৭৬২০৯৩) চালু করেছেন কুমিল্লার লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেএম ইয়াসির আরাফাত। হটলাইনে এসএমএস পাঠালেই তদন্ত সাপেক্ষে মিলছে খাদ্য সহায়তা। গত তিনদিনে এসএমএস পেয়ে ২শ ৫৫টি মধ্যবিত্ত পরিবারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ দিনমজুর, ভিক্ষুক, হতদরিদ্রসহ আর্থিক সংকটে পড়া প্রায় ১১ সহস্রাধিক পরিবারে খাদ্য সামগ্রী পৌছেছে।