অনলাইন ডেস্ক।।
কুমিল্লার একটি খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে সেতু। তবে এর দুই পাশে নেই সংযোগ সড়ক। এক পাশে বসতবাড়ি, অন্যপাশে ফসলি জমি। তাই সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না এলাকাবাসীর। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কোদালিয়া এলাকায় রুহিতা খালের ওপর প্রায় ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সেতুটি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রুহিতা খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২৯ লাখ ১৭ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারা ইউনিয়নের কোদালিয়া মজুমদার বাড়ির দক্ষিণ পাশে রুহিতা খালের ওপর ৩৬ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর দুইপাশে নেই সংযোগ সড়ক। সেতুর উত্তর পাশে বসতবাড়ি ও দক্ষিণ পাশে বিশাল ফসলের মাঠ। গত আড়াই বছর ধরে খালের ওপর দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের দাবি, এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি মাছের প্রজেক্টের সুবিধার জন্যই সেতুটি নির্মাণ করা
হয়েছে। সে বিষয়টি এলাকায় এখন ওপেন সিক্রেট।
কোদালিয়া গ্রামের সর্দার ইছহাক মজুমদার বলেন, সংযোগ সড়ক ছাড়া ব্রিজটি কোনো কাজে আসবে না। তবে সড়ক নির্মাণের জন্য ব্রিজের দুইপাশে সরকারি কোনো জায়গাও নেই। তাই মাছের প্রজেক্ট মালিক আবদুল মালেক ছাড়া এলাকাবাসীর কোনো কাজেই আসবে না ব্রিজটি।
একই গ্রামের বাসিন্দা আবু সাঈদ মজুমদার বলেন, রাস্তার দেখা নেই, ব্রিজ নির্মাণ করে বসে আছে। আগে দেখতাম সড়ক নির্মাণ করে তারপর ব্রিজ বা কালভার্ট করতো। এ ব্রিজ নির্মাণের ক্ষেত্রে হয়েছে উল্টোটা। এছাড়া এখানে বর্ষাকালে গলাসমান পানি থইথই করে। তাই এটি এলাকাবাসীর কোনো কাজেই আসবে না।
তবে অভিযুক্ত আবদুল মালেক বলেন, ব্রিজটির দুইপাশে রাস্তা নির্মাণ হলে আমি ছাড়াও এলাকাবাসীর উপকারে আসবে। তাই আগেই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে।
অপরিকল্পিতভাবে খালের ওপর সেতু নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, জনগুরুত্ব বিবেচনা করে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।
তবে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু বলেন, বিনা প্রয়োজনে রুহিতা খালের ওপর ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটি সরকারের অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছুই না। তার দাবি, ব্রিজটি কার প্ররোচনায় নির্মাণ করা হয়েছে সে বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা খতিয়ে দেখবেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন, অপরিকল্পিতভাবে সেতু করার সুযোগ নেই। অবশ্যই এর দুইপাশে সংযোগ সড়ক থাকতে হবে। কারণ মানুষ যদি চলাচলই করতে না পারে, তাহলে ব্রিজ দিয়ে কী হবে। আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। সরেজমিন পরিদর্শন করে এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জাগো নিউজ