কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বলরামপুর। এ গ্রামের মাঠে প্রথমবারের মতো হলদে রঙের তরমুজের চাষ করা হয়েছে। বলরামপুর গ্রামের কাজী আনোয়ার হোসেন এ তরমুজ চাষ করেছেন। তার মাচায় ঝুলে থাকা হলদে তরমুজ দেখতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন আশপাশের গ্রামের উৎসুক মানুষ।
শনিবার বিকালে জমিতে গিয়ে দেখা যায়, উঁচু বেডের মাটি মালচিং শিট পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। তার মাঝে গোল করে কাটা স্থানে তরমুজ গাছ লাগানো হয়েছে। মাচায় ঝুলছে হলুদ ও কালো রঙের তরমুজ। যাতে ছিঁড়ে না যায় তাই নেটের ব্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। হালকা বাতাসে সারি সারি তরমুজ দুলছে। হলুদ রঙের সঙ্গে কালো রঙের ব্ল্যাক সুইট-২ তরমুজও চাষ করা হয়েছে। এখানে কৃষক মার্চ মাসের ২০ তারিখে চারা লাগিয়েছেন।
১০ দিন পর তরমুজ কাটতে পারবেন। স্থানীয় কমলপুর গ্রামের মো. ইউনুস বলেন, এর আগে এ কৃষক ব্ল্যাক বেরি তরমুজ চাষ করেছিলেন। খেত থেকে তরমুজ কিনে খেয়েছিলেন। দেখতে সুন্দর ও খেতে মিষ্টি। এবার হলুদ তরমুজ চাষ করেছেন। আশা করছেন এবারের তরমুজও খেতে ভালো লাগবে।
কাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, বিশেষ পলিথিন দিয়ে ঢাকা বেড তৈরি করি। পলিথিনের নিচে একসঙ্গে সার গোবর দিয়ে দেই। পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়ায় সার নষ্ট হয় না, একাধিকবার দিতে হয় না। এতে পোকার আক্রমণ কম হয়।
মাচা তৈরি করে তাতে সুতা বেঁধে দেই। তরমুজ বড় হলে নেটের ব্যাগ দিয়ে সুতায় ঝুলিয়ে দেই। এবার তরমুজ হলুদ হলেও এটির ভিতরে লাল ও স্বাদে কড়া মিষ্টি হবে। প্রথমে স্থানীয় কৃষকরা তার অসময়ে এ তরমুজ চাষের বিষয়টিকে পাগলামি বলতেন। এখন ভালো ফলন দেখে সবাই তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এবার ৬৫ শতক জমিতে তার এক লাখ ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে।
আশা করছেন ১০ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন। স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাহিদা খাতুন বলেন, হলুদ তরমুজ থ্যাইল্যান্ডের ইয়োলো কিং তরমুজ। আনোয়ার হোসেনকে প্রাকৃতিক উপায়ে পোকা দমন প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। তার ফলন দেখে ভালো লাগছে। কম সময়ে তরমুজ চাষে কৃষকরা ভালো লাভ করতে পারবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, জমিটি পরিদর্শন করেছি। হলুদ তরমুজ চাষ কুমিল্লায় প্রথম। তার ফসল তোলার সময় মৌসুমি তরমুজ কমে আসবে। সে কারণে আনোয়ার ভালো দাম পাবে।
বিডি প্রতিদিন