করোনার হটস্পট মুরাদনগরে জীবন বাজী রেখে রোগী দেখছেন ৪ চিকিৎসক

আরিফ গাজী :
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সারাদেশে চিকিৎসা সেবা এখন বিপর্যস্ত প্রায়। অপরদিকে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশংখায় ডাক্তাররা নিয়মিত হাসপাতালে না যেতে পারা ও চেম্বার বন্ধ রাখায় সাধারণ রোগীরাও বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের পাওনা সেবা থেকে। তবে তার উল্টো চিত্র দেখা মেলে করোনার হটস্পট খ্যাত কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায়। করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই জীবনের ঝুকি নিয়ে পূর্বের ন্যায় সাধারণ রোগীদের পাওনা শতভাগ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ৪জন চিকিৎসক। তাদের মধ্যে কেউ নিয়মিত হাসপাতালে গিয়ে, আবার কেউবা নিজস্ব চেম্বারে বসে এই চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।

করোনার এই দুঃসময়ে পুরো উপজেলা বাসিকে যেসব চিকিৎসকরা সেবা দিয়ে মহানায়কের ভূমিকা পালন করছে তারা হলেন, ডাঃ সিরাজুল ইসলাম মানিক, ডাঃ আবদুল্লাহ আল মামুন, ডাঃ সানজিদা আক্তার ও ডাঃ কামরুল ইসলাম।

জানা যায়, করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নন কোবিড রোগীরা যখন ডাক্তার না পেয়ে বিনা চিকিৎসায় নানা সমস্যায় ভোগছেন। তখনও মুরাদনগর উপজেলায় জীবনের ঝুকি নিয়ে সাধারণ রোগীদের শতভাগ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ওরা চার চিকিৎসক। এছাড়াও রোগী দেখার পাশাপাশি টেলি মেডিসিনের মাধ্যমেও অনেক রোগীদের প্রতিনিয়ত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সিরাজুল ইসলাম মানিক ও মেডিকেল অফিসার (গাইনি, মা ও শিশু বিশেষজ্ঞ) ডাঃ সানজিদা আক্তার প্রতিদিন হাসপাতালে গিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে দৈনিক গড়ে প্রায় দুই শতাধিক রোগী দেখছেন। এছাড়াও দু’জনের চেম্বারে প্রতিদিন প্রায় আরো শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা।

অপরদিকে পূর্বের নেয় ঢাকা মাতুয়াইলের শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের মেডিকেল অফিসার ডাঃ আবদুল্লাহ-আল-মামুন সপ্তাহে ৩দিন করে (বৃহস্পতি,শুক্র,শনিবার) মুরাদনগরে তার চেম্বারে প্রায় ২শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।

পিছিয়ে নেই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিষ্টার ডাঃ কামরুল ইসলাম তিনিও সপ্তাহে ৩দিন করে (বৃহস্পতি,শুক্র,শনিবার) মুরাদনগরে এসে জীবনের ঝুকি নিয়ে পূর্বের নেয় রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। আরো ভালো লাগার বিষয় হলো তারা সকলেই পূর্বের ন্যায় রোগীদের কাছ থেকে তাদের সাধ্যমত পরামর্শ ফি নিচ্ছেন।

চিকিৎসা নিতে আসা ৭০ বছর বয়সী মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘বাবারে আমি আমার পোলার বাসা ঢাকায় গেছিলাম ভালো চিকিৎসা করাইতে। আমারে হাসপাতালে নেওয়ার পর কেউ ভালো কইরা ধইরা দেখলো না। শুধু কইলো ঔষুধ দিছি বাড়ী গিয়া খান। দশ দিন ঔষুধ খাওয়ার পরেও ভালো না বুঝায় ছোট ছেলে জোর কইরা গ্রামের বাড়ি মুরাদনগর নিয়া আসে। পরে হাসপাতালে নিয়া গেলে তারা কি জানি সাদা পোশাক পইরা আমারে ভালো ভাবে দেইখা ঔষুধ দিলো। অহন তাগো ঔষূধ খাইয়া আমি পুরাপুরি সুস্থ। দোয়া করি আল্লাহ যেন তাগো ভালো করে’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সমাজকর্মী বলেন আমার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য এবং কয়েকজন আত্মীয়

জ্বরসহ বেশ কিছু উপসর্গ নিয়ে অস্স্থু হয়ে পড়লে ডাঃ আবদুল্লাহ আল মামুন স্যার টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে তাদের চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করেন। উনার চিকিৎসা নিয়ে আল্লাহর রহমতে এখন সবাই সুস্থ হয়েছেন।

এ উপজেলায় করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৩জন চিকিৎসক, ৩৭জন স্বাস্থ্যকর্মী ও ১জন স্বেচ্ছাসেবক ল্যাব টেকনিশিয়ানসহ সর্বমোট করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ২’শ ৮৯জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১’শ ৭৩জন ও মৃত্যু বরণ করেছে ১২ জন।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
error: ধন্যবাদ!