মাজহারুল ইসলাম বাপ্পি।।
কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ নলেজ পার্ক এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। শনিবার দুপুর ৩ টায় লালমাই উপেজেলার দত্তপুর মৌজায় নলেজ পার্কের ভিত্তি প্রস্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী
আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, কুমিল্লার মানুষ শিক্ষা-দীক্ষায় ও কাজ কর্মে অনেক এগিয়ে। কুমিল্লাকে আরো এগিয়ে নিতে “নলেজ পার্ক” সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরো বলেন, অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ৩৫ তম অবস্থানে। এক সময় অর্থনৈতিক সূচকে আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বেও মানচিত্রে খুঁজেও পাওয়া যেত না- সেই বাংলাদেশকে সারা বিশ্ব এখন একটি অসাধারণ বিপ্লবী দেশ বলে চিনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ সাল থেকে এই ১৪ বছরে বাংলাদেশের এই আমূল পরিবর্তন এসেছে।
অনুুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, কুমিল্লার অনেক স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন।
এই তরুণ-তরুনীদেরকে যদি আমরা আইটিতে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি তাহলে এই অঞ্চলের অর্থনীতির ইকোসিস্টেমে আমূল পরিবর্তন আসবে। তিনি বলেন, ১৫ বছর আগেও দেশের স্বল্প শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম কর্মসংস্থানের জন্য যেখানে গার্মেন্টসসহ অন্যান্য শ্রমনির্ভর শিল্পের উপর নির্ভরশীল ছিলো, সেখানে বর্তমানে তারা আইটি শিল্পে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলছে। এছাড়া স্টার্টআপ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশের হার বাড়ানো এবং জেন্ডার ইনক্লুসিভ এন্টারপ্রেনারশিপ তৈরিতে এই নলেজ পার্ক সরাসরি ভূমিকা রাখবে। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ হবে বিশ্বের অন্যতম আইটি হাব।
বাংলাদেশ থেকেই পরিচালিত হবে বিশ্বের অনেক জায়ান্ট কোম্পানি। সেগুলোর পরিচালনায় নেতৃত্ব দেবে আমাদের নতুন প্রজন্মের সন্তানেরা। সেই সময়ের উদ্ভাবনী মেধাসম্পন্ন তরুণ-তরুণীর মেধার বিকাশ ঘটবে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর, ইনোভেশন হাব-এর মতো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। শীঘ্রই এই পার্কের পাশে ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার’ এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
এখানে যে দক্ষ জনবল সৃষ্টি হবে তারাই আবার এই নলেজ পার্কে কাজ করবে। তখন এই পার্কের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ মানবসম্পদ পেতে সমস্যা হবে না।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) জি এস এম জাফরউল্লাহ্ বলেন, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর মাধ্যমে বর্তমানে সারা দেশে সরাকারি উদ্যোগে ১৯২টি হাই-টেক পার্ক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক/আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে, ইতোমধ্যে ১১টি পার্ক স্থাপনের কাজ সমাপ্ত হয়েছে যেখানে ইতোমধ্যে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে গঠিত হয়েছে আরো ১৭টি পার্ক। ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের প্রতিযোগিতা মোকাবেলায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইওটি, রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটির উচ্চপ্রযুক্তির ৩০টি বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে এবংবিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হচ্ছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এনডিসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) জি এস এম জাফর উল্লাহ। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বিপিএম বার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পংকজ বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন হাই টেক পার্ক স্হাপন প্রকল্পের জেলা পর্যায়ের পরিচালক এ কে এম ফজলুল হক।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার, লালমাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুল হাসান শাহীন, লালমাই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজুমদার প্রমুখ।