লালমাই প্রতিনিধি :
সমাজ উন্নয়ন সংস্থার প্রধান নির্বাহী ও লালমাই উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবদুল হালিম মজুমদারের বিরুদ্ধে হরিশ্চর-কাশিনগর সড়কের ভাটরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হইতে মজিবনগর এলাকায় বনায়নকৃত অর্ধশতাধিক মেহগনি ও একাশি গাছ বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। গত ৭/৮দিন ধরে তিনি নিজে উপস্থিত থেকে ক্রেতাদের গাছ কর্তনে সহায়তা করেছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। বিক্রিত গাছের আনুমানিক মূল্য ২লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
প্রত্যক্ষদর্শী, বনায়ন সংশ্লিষ্ট ও ভুমি মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের অনাপত্তি সাপেক্ষে ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মোঃ তৈয়ব আলীর সাথে উল্লেখিত সড়কে বনায়নের বিষয়ে চুক্তি (মেয়াদঃ ৩০/০৪/২০৪৩ইং পর্যন্ত) করেন সমাজ উন্নয়ন সংস্থার (রেজি: নং কুমি/১৮৮৪/০৯ইং) প্রধান নির্বাহী মোঃ আবদুল হালিম মজুমদার। সেই চুক্তিতে উল্লেখ ছিল, রোপিত গাছ নিদিষ্ট মেয়াদের মধ্যে দুই ধাপে বিক্রি করা হইবে।
বনায়নকারী সংগঠন উপজেলা বন সংরক্ষক কমিটিকে লিখিতভাবে অবহিত করে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে টেন্ডার বা সরাসরি মাইকিং করে সর্বোচ্চ ডাক দাতার কাছে গাছ বিক্রি করা হইবে। গাছের বিক্রিত অর্থের ১৫ ভাগ ইউনিয়ন পরিষদ, ৬০ ভাগ বনায়নকারী (উপকারভোগী), ১০ ভাগ ভুমি মালিক, ১০ ভাগ সামাজিক বনবিভাগ ও ৫ ভাগ বৃক্ষরোপন তহবিল টিআইএফ ভোগ করবে। চুক্তিনামায় স্বাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেন ভুলইন দক্ষিণ ইউপি সচিব মোঃ ওবায়দুর রহমান ও ৫নং ওয়ার্ডের তৎকালীন মেম্বার মোঃ সফিকুর রহমান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইউপি মেম্বার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত বছর হরিশ্চর-কাশিনগর সড়কে প্রশ্বস্থকরণ কাজ চলাকালীন আবদুল হালিম মজুমদার প্রায় শতাধিক গাছ টেন্ডার ছাড়াই বিক্রি করেছেন। যেগুলোর বাজারমূল্য হবে কমপক্ষে ২০ লক্ষ টাকা। এবারও তিনি অনুমোদন ছাড়া অর্ধশতাধিক একাশি ও মেহগনি গাছ বিক্রি করেছেন।
সমাজ উন্নয়ন সংস্থার প্রধান নির্বাহী মোঃ আবদুল হালিম মজুমদার মোবাইল ফোনে বলেন, গাছগুলো আমি লাগিয়েছি। অনেক কষ্ট করে গাছ বড় করেছি। নিজের চিকিৎসার জন্য ৮/১০টি গাছ বিক্রি করেছি। তাছাড়া গাছগুলো উপজেলা প্রশাসন বা বন বিভাগের নয়। তারা আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবেন না। এই বনায়নের কর্তৃপক্ষ হলো সড়ক বিভাগ। অবশ্য পরবর্তীতে সরজমিনে গেলে তিনি গাছ বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে কিছু নষ্ট গাছ কর্তনের দাবী করেন।
ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান একরামুল হক বলেন, বিষয়টা আমি আগে থেকে জানতাম না । চুক্তি কোন ইউনিয়নের সাথে হয়েছে সেটাও জানিনা। তবে অনুমোদন ছাড়া সড়কের গাছ কর্তনের বিচার চাই।
লালমাই উপজেলা বন কর্মকর্তা মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, টেন্ডার বা অনুমোদন ছাড়া সরকারি সড়কের গাছ কর্তন বেআইনি। তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার অজিত দেব বলেন, তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।