কুমিল্লা সদর দক্ষিণে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ধানের চারা রোপন করলেন জেলা প্রশাসক

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

কুমিল্লার তিন উপজেলার প্রায় ৪৫০ একর জমিতে এবার রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের সাহায্যে বোরো ধান রোপণ করা হয়েছে। সোমবার কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় এই পদ্ধতিতে ধান চাষের উদ্বোধন করা হয়। উপজেলার চৌয়ারা ইউনিয়নের বি-বাড়িয়ায় কৃষক মোস্তফা মজুমদার এর জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে মেশিনের মাধ্যমে ধানের চারা রোপন কাজের উদ্বোধন করা হয়।  
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের সাহায্যে স্বল্প সময়ে জমির ধান রোপন হয়ে গেছে। এসময় গ্রামের শত শত কৃষক ও উৎসুক জনতা রোপণ পদ্ধতি দেখতে ভিড় করেন। চলতি বোরো মৌসুমে সদর দক্ষিণ উপজেলাতে ১৫০ বিঘা জমিতে এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হবে। এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে খরচ কমবে। সাথে ফলন বাড়বে। এছাড়া পরিপক্ব ধান পেতে সময়ও কমে আসবে। এ নিয়ে খুশি স্থানীয় কৃষকরা। এর আগে চৌয়ারা ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে রবি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বোরো ধানের সমলয়ে চাষাবাদের ব্লক প্রদর্শনীর উদ্বোধন ও কৃষক সমাবেশ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম।
সদর দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী অফিসার শুভাশিস ঘোষ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মিজানুর  রহমান, সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাবলু, সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুর রহিম, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার পুতুল, চৌয়ারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী আবুল কালাম আজাদ সোহাগ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদর দক্ষিণ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল বাশার চৌধুরী। সদর দক্ষিণ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাসনাত এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন চৌয়ারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ খোরশেদ আলম, চৌয়ারা ইউনিয়নের বামিশা ব্লক এর কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আরিফুজ্জামান মৃধা সহ চৌয়ারা ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ড মেম্বার এবং স্থানীয় কৃষকগণ।
স্থানীয় কৃষক মোস্তফা বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদ নিয়ে আমাদের মধ্যে ভুল ধারণা ছিল। আগে ধান রোপণে অনেক পরিশ্রম করতে হতো। আজ অল্প সময়েই জমির ধান রোপণ হয়ে গেছে। সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এ উদ্যোগ গ্রহন করার জন্য।

সদর দক্ষিণ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল বাশার চৌধুরী বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে সদর দক্ষিণ উপজেলাতে ১৫০ বিঘা জমিতে এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হবে। এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে খরচ কমবে। সাথে ফলন বাড়বে। এছাড়া পরিপক্ব ধান পেতে সময়ও কমে আসবে। এ নিয়ে খুশি স্থানীয় কৃষকরা। এবার প্রণোদনার আওতায় থাকা ৬৩ জন কৃষক এই সুবিধা পাচ্ছেন। মৌসুম শেষে সকল জমি কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে কর্তনের ব্যবস্থা করা হবে। কৃষকরাও এ পদ্ধতিতে সন্তোষ প্রকাশ করছেন।

সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুভাশিস ঘোষ বলেন, শুধু মাঠ নয়, ঘরের সামনের আঙ্গিনায় ফল ও সবজি চাষ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এক ইঞ্চি জমিনও আমরা খালি রাখবো না। সকল জমিন চাষাবাদের আওতায় আনতে পাড়লে, সকল বিপর্যয় কাটিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে পারবো।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, এবার কুমিল্লার বুড়িচং, লাকসাম ও সদর দক্ষিণ উপজেলার প্রায় ৪৫০ একর জমিতে রাইস
ট্রান্সপ্লান্ট মেশিনের মাধ্যমে চাষাবাদ করা হচ্ছে। এতে ধান চাষের কারণে সময় কমে আসবে। জমিতে তিন ফসলের পরিবর্তে চার ফসল হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন,
বর্তমান সরকারের আমলে কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। সরকার ৭০% প্রণোদনা দিচ্ছে। এক সময় সারের জন্য মানুষের মধ্যে হাহাকার ছিল। এখন কৃষি খাতে সরকার ব্যাপক প্রণোদনা দিচ্ছে। আশপাশের কোন জমিন অনাবাদি রাখা যাবে। এক ইঞ্চি জমিনও খালি ফেলে রাখা যাবে না। সকল অনাবাদি জায়গা আবাদের আওতায় আনা হলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটেও বাংলাদেশের খাদ্য সংকটে পড়তে হবে না। তাই আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে কৃষিকে এগিয়ে নিতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কৃষকদেরও এগিয়ে আসতে হবে।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
error: ধন্যবাদ!