৪ এপ্রিল পর্যন্ত নিট গার্মেন্টস বন্ধ রাখার নির্দেশ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সকল নিট গার্মেন্টস বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিকেএমইএ সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান এমপি।

এর আগে গত ২৫ মার্চ গার্মেন্টস মালিকদের প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে কারখানা চালু রাখার পরামর্শ দেয়া হলেও এবার বেশ কঠোর অবস্থান নিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি সেলিম ওসমান।

এ ব্যাপারে শুক্রবার সেলিম ওসমান যুগান্তরকে জানান, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণের যে ক্ষতিকর প্রভাব বাংলাদেশে পড়েছে, তা থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচানোই এ মুহূর্তে আমাদের সবার লক্ষ্য। মানুষ বাঁচলে শিল্প বাঁচবে এবং শিল্প বাঁচলে দেশ সমৃদ্ধ হবে। এজন্যই দেশের স্বার্থে সরকার সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে।

সেলিম ওসমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী রফতানিমুখী শিল্পকে করোনা আক্রান্ত অর্থনৈতিক মন্দা থেকে রক্ষার জন্য বিশাল প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা এই শিল্পখাতের জন্য প্রদান করেছেন। এমন প্রেক্ষাপটে আমাদের কারণে কোনো শ্রমিকের যেন কোনোরূপ ক্ষতি না হয়, সেজন্য কোনো ভাবেই আতঙ্কিত না হয়ে দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত সব নিট পোশাক কারখানা আপাতত ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার বিশেষ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

সেলিম ওসমান আরও বলেন, সরকার জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছেন। রাস্তায় চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা একত্রে ২ জন অধিক ব্যক্তি এক সঙ্গে রাস্তায় চলাফেরা করতে নিষেধ করেছেন। গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এতে করে আমাদের শ্রমিক ভাইবোনদের যাতায়াত এবং খাওয়া-দাওয়ায় ভীষণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়াও আমাদের মাঝে কেউ করোনা রোগে আক্রান্ত হয়েছে কিনা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা নিজেরাও চাচ্ছি আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত আমাদের কারখানাগুলো বন্ধ থাকুক।

বিকেএমইএ সভাপতি বলেন, পরবর্তী সময়ে কারখানা চালু হলে প্রতিটি কারখানার ভেতরে অবশ্যই মেডিকেল সেন্টার স্থাপন করতে হবে। সেই কারখানা এবং শ্রমিকদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে। যদি কোনো কারখানায় কোন শ্রমিকের জ্বর হলে বা শারীরিক ভাবে অন্য কোনো অসুস্থতা আছে কি না তা শনাক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিশেষ করে হাত ধোয়ার জন্য সুব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে শ্রমিকসহ সবার মাস্ক পড়ার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হবে।

সেলিম ওসমান আরও বলেন, গণমাধ্যমে সরকারিভাবে যে সব সতর্কবার্তা প্রকাশিত হয়েছে সেগুলো সম্পূর্ণভাবে মেনে কারখানা চালানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। বিশেষ করে পঞ্চবটি বিসিক শিল্প নগরীতে অথবা একই স্থানে পাশাপাশি অবস্থানে একাধিক কারখানা গুলোতে কোনো অবস্থাতেই যেন মালিক বা শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত না হয় তার সুব্যবস্থা করতে হবে।

এদিকে কেউ কারখানা খোলা রাখলে সে ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না এ প্রসঙ্গে সেলিম ওসমান বলেন, কেউ কারখানা বন্ধ রাখবে, কেউ কারখানা বন্ধ রাখবে না তাতে উদ্যোক্তা এবং শ্রমিকের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হবে। আমার বিশ্বাস বিকেএমইএর প্রতিটি সদস্য দেশের এই ক্রান্তিকালে অবশ্যই আমাদের সিদ্ধান্ত মানবেন অতীতের মতোই।

তিনি বলেন, যে কোনো অবস্থায় জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে করোনাভাইরাসকে দমন করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রতিটা উদ্যোক্তাকে যথাসময়ে মার্চ মাসের বেতন শ্রমিকদের পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সবার সহযোগিতায় ঘরে বসে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হওয়ার একমাত্র পথ।

সেলিম ওসমান বলেন, কোনো অবস্থায় আমাদের শ্রমিক ও কর্মকর্তা যেন ঘরের বাইরে না যান। কোনো প্রকার আড্ডাবাজি এবং চায়ের দোকানগুলোতে জড়ো না হয় সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করছি।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
error: ধন্যবাদ!