স্বকৃত গালিব,কুবি প্রতিনিধি :
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) আতঙ্কে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) একাডেমিক সকল কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিভিন্ন বিভাগ এবং ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
গত ৮ মার্চ (রোববার) দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার তথ্য দেয় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এরপর থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি তুলতে থাকে। মূলত শ্রেণিকক্ষে লোক সমাগম অনেক হওয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি বলে যুক্তি তাদের।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলে ১৩ জন জ্বরে আক্রান্ত হওয়েছে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় হলজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ বিষয়ে আবাসিক এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা হলে থাকি। অনেক শিক্ষার্থী একসাথে, যেটি এই দুঃসময়ে খুবই আতঙ্কিত হওয়ার মত। আশা করছি প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিবে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের তিনটি এবং ছাত্রদের একটি হলে গণরুম রয়েছে।
অপরদিকে রবিবার (১৫ মার্চ) সন্ধায় নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১১তম ব্যাচের তিনজন শিক্ষার্থীকে জ্বরাক্রান্ত হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এবং একই ব্যাচের আরও ৯ জন শিক্ষার্থী জ্বরে আক্রান্ত বলে জানা যায়।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও প্রথম ব্যাচের ক্লাস প্রতিনিধি দেব প্রকাশ চক্রবর্তী বলেন,নজরুল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও নৃবিজ্ঞান বিভাগ একারোতম ব্যাচেলর একাধিক শিক্ষার্থী জ্বর সর্দি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় আমরা আতঙ্কিত।তাই করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে ও নিজেদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা চিন্তা করে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরিক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এদিকে করোনা আতঙ্কে একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমম বিভাগের ৯ম, ১১তম, এবং ১২তম ব্যাচ, আইসিটি বিভাগের ৯ম, ১০ম, ১১তম, ১২তম, ১৩তম, ১৪ তম ব্যাচ, আইন বিভাগ , বাংলা ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আগামীকাল সোমবার (১৬মার্চ) থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষনা দিয়ে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের ডা: মাহামুদুল হাসান খান বলেন, ‘গণরুম করোনাভাইরাস ছড়ানোর অন্যতম সোর্স। এখানে অনেকজন একসাথে থাকে ফলে হাঁচি-কাশি থেকে করোনা ছড়াতে পারে। জনসমাগম থেকে দূরে থাকতে হবে।’
করোনা প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয় কোনও প্রকারের ব্যবস্থা নিবে কিনা জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, ‘আমরা করোনা সম্পর্কে সচেতন করতে সেমিনারের আয়োজন করবো। এখন গণরুমের শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না। নিজেদেরকে সচেতন থাকতে হবে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রাণালয়ের সিন্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছি আমরা।’