চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সরকার ঘোষিত দেশে চলমান সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে রয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল থেকেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মনজুরুল হক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল-আমিন সরকারের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রয়েছে। এদিন মহাসড়কে গণপরিবহণ বন্ধ থাকলেও রাস্তায় পণ্যবাহী যান, রিকশার পাশাপাশি সিএনজি ও অটোরিকশা সীমিত আকারে চলতে দেখা গেছে।
চৌদ্দগ্রাম বাজার সহ এলাকার হাটবাজারগুলোতে সাধারণ মানুষের চলাচল তেমন একটা দেখা যায়নি। বন্ধ রয়েছে শপিং মল সহ দোকানপাট। সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল-আমিন সরকারের নেতৃত্বে চৌদ্দগ্রাম বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়।
লকডাউনে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে বিনা কারণে চলাচল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়ে দুই পথচারী ও দুই ব্যবসায়ীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন সরকার ভ্রাম্যমাণ আদালতে এ জরিমানা করেন।
জানা গেছে, চৌদ্দগ্রাম বাজারের ওয়াপদা রোডে একটি সুতা দোকান খোলা রাখার দায়ে ৩ হাজার টাকা, মহাসড়কের পাশের একটি দোকানে কাস্টমার বসিয়ে চা বিক্রির দায়ে ৫ হাজার টাকা ও বিনা কারণে বাজারে ঘোরাঘুরির দায়ে দুই পথচারীকে ১ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
এবিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল-আমিন সরকার বলেন, ‘লকডাউন বাস্তবায়নে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে।
সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে যারা রাস্তায় বের হয়েছেন অথবা দোকান খোলা রেখেছেন তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি মাস্ক বিতরণও করা হয়েছে।
সর্বাত্মক লকডাউন কার্যকর করতে হলে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের কঠোর হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। চৌদ্দগ্রামের সকল মানুষকে সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ করছি। জরুরি সেবায় নিয়োজিত এবং গণমাধ্যম কর্মীরা যেনো কোনো ধরণের হয়রানির শিকার না হন এ বিষয়ে সকলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে’।
অপরদিকে সেনাবাহিনীর ১৬ পদাতিক ডিভিশনের ৪৪ বেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন জোবায়ের হোসেন এর নেতৃত্বে একটি টিম চৌদ্দগ্রাম ও কাশিনগর বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় টহল দেন। এসময় হ্যান্ডমাইকে সকলকে সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ করেন। করোনা প্রতিরোধে সকলে ঘরে থাকার ও জরুরি প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেন তিনি।
এছাড়াও চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ ও মিয়াবাজার হাইওয়ে থানা পুলিশকে লকডাউন বাস্তবায়নে মহাসড়কসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় টহল দিতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) ভোর থেকে কঠোর বিধিনিষেধ চালু করে সরকার। এই বিধিনিষেধকে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ বলা হচ্ছে। টানা এক সপ্তাহের এই নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ৭ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত।