স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের খেলার মাঠটি যেন কচু ক্ষেতে পরিণত হয়েছে । শুধু কচু গাছই নয়, সারা বছর মাঠটি পানিতে ডুবে থাকায় মশার উপদ্রবও বেড়েছে। ফলে খেলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায়ও ব্যবহার হয় না মাঠটি।এই অবস্থা বিরাজ করছে প্রায় দুই যুগ ধরে।
১৮৯৯ সালে রায় বাহাদুর আনন্দ চন্দ্র রায়ের প্রতিষ্ঠিত ও নবাব ফয়জুন্নেছার ১০ হাজার টাকার অনুদানে নির্মিত হয় কলেজটি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই কলেজের সার্বিক অবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও ধর্মপুরে অবস্থিত ডিগ্রি শাখার একমাত্র বিনোদনের কেন্দ্র বিশালাকৃতির খেলার মাঠটি প্রায় ২ যুগ ধরে হাঁটু সমান পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। যার কারণে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলেজ অ্যাকাডেমিক কাম অ্যাক্সামিনেশন হল, ম্যানেজমেন্ট, ইকোনমিক্স ও অডিটরিয়াম ভবন মাঠের দক্ষিণ পাশ ঘেরা পানি অপসারণের ড্রেনটি সরাসরি কলেজের পূর্বদিকে অবস্থিত বিসিকের সঙ্গে যুক্ত। যার কারণে বিসিকের বিষাক্ত ময়লা পানি ড্রেন দিয়ে কলেজের পশ্চিম পাশে অবস্থিত তোয়া হাউজিং এলাকায় গিয়ে জমা হতো। গত কয়েক বছরে তোয়া হাউজিংটি ভরাট হওয়ার কারণে এবং ড্রেনটি ক্রমান্বয়ে সরু হওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশিত হতে পারছে না। অপরদিকে কলেজ এলাকা থেকে তার আশপাশের এলাকার পানি কলেজ মাঠে এসে জমা হয়।
এ কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের কলেজে কোনও মাঠ আছে নাকি? আমি তো তাকে জলাশয় ভেবেছিলাম।’
কবি কাজী নজরুল হলের ছাত্র আফসার বলেন,এত বিশাল মাঠ থাকার পরও গত ৬ বছর ধরে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। কোনও ধরনের প্রতিযোগিতামূলক খেলাও খেলতে পারছি না।
বাংলা বিভাগের মো. শরিফ বলেন,এই মাঠের বিষাক্ত পানি আর ময়লা আবর্জনার কারণেই কলেজের একমাত্র আবাসিক ছাত্রাবাস কবি নজরুল হলে সারাবছরই মশার অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে। প্রশাসনের উচিত এই পানি অপসারণে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া।’
কলেজের নবাব ফয়জুন্নেছা হলের শিক্ষার্থী আফসানা আক্তার লিলি বলেন,ভিক্টোরিয়া কলেজ দক্ষিণ বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ট বিদ্যাপিঠ।অথচ বাহির থেকে কেউ কলেজে আসলে মনে করবে আমাদের কলেজ প্রশাসন কলেজ কচু সবজি চাষাবাদ করছে। এত বড় একটি কলেজে প্রায় ২৪ বছর ধরে খেলার মাঠটি পরিত্যক্ত হয়ে কচু ক্ষেতে পরিনত হয়েছে এটা ভাবলেই কষ্টের পাশাপাশি লজ্জ্বাও লাগে। আমার দাবী দ্রæত আমার খেলার মাঠ ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো.রুহুল আমিন ভূইয়া বলেন, আমার প্রধান লক্ষ্য খেলার মাঠটিকে ভরাট করা। এ সমস্যাটি বহু বছর ধরে। মূলত এ এলাকায় অপরিকল্পিত বাড়ি ঘরের কারণে এ সমস্যাটি হচ্ছে। তাবে দীর্ঘ দিনের সমস্যা সমাধানে দীর্ঘ মেয়াদি পরীকল্পনা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। আশাকরি স্থায়ী সমাধান হবে।