মুরাদনগরে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কৌশলে ভরাট হয়ে যাচ্ছে ৩’শ বছরের পুরনো রায় দিঘি

আরিফ গাজী :

কুমিল্লার মুরাদনগরে এক সময় অসংখ্য ছোট-বড় পুকুর, দিঘি থাকলেও তার সিংহভাগই এখন ভরাট হয়ে গেছে, আর সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে বাসাবাড়ি। অপরিকল্পিত ভাবে ভারট করে নতুন নতুন আবাসীক এলাকা গড়ে তুলার ফলে এসব পুকুর-দিঘির নামগুলো শুধু টিকে আছে।

উপজেলা জুড়ে বর্তমানে হাতেগোনা কয়েকটি পুরনো পুকুর-দিঘি বেঁচে থাকলেও সেগুলো দখল-দূষণে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। এবারে কৌশলে প্রায় ১৬ একরের একটি ৩’শ বছরের পুরনো দিঘি গিলে খাওয়ার মিশনে নেমেছে উপজেলার নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের নগরপাড় এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা।

এক ট্রাক ভাঙা ইট অথবা মাটি ফেলার পর চলে বিরতি। এক দিন পর আবারও এক ট্রাক ইট অথবা মাটি ফেলা হচ্ছে সেখানে। এভাবে কৌশলে দিঘিটি ভরাট করছে বলে স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা, নিতাইসহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রায় ৩’শ বছরের পুরনো এই দিঘিটি ১৫ একরের অধিক জায়গা নিয়ে স-স্থানে ছিল। ২০১২ সালে দিঘির পরিবেশ রক্ষার্থে স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী আদালতে মামলা করেন। সেই মামলার জেরে ওই বছরেই পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত দিঘিতে কোন প্রকার ভরাটের কাজ না করতে আদেশ দেন উচ্চ আদালত। অথচ সে আদেশকে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে বিগত কয়েক বছরে ওই দিঘিটির প্রায় ৬ একরের অধিক জায়গা কৌশলে ভরাট করে নিয়েছে চার পাশের বাসিন্দারা।

দিঘি ভরাটের বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম মোস্তফার কাছে জানতে চাইলে তিনি কুমিল্লা এসডি নিউজ কে বলেন, এই দিঘিতে আমার প্রায় দেড় একর জায়গা রয়েছে। আদালতে মামলা চলার কারনে কেউ আর ভরাট করছে না। তাই আমিও ওই দিঘিতে আমার জায়গা থাকা সত্ত্বেও কোন প্রকার ভরাট করছি না। কৌশলে ইট ফেলে ভরাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা মিথ্যা কথা। আগে থেকেই এই জায়গা ভরাট ছিলো।

তবে স্থানীয় বাসিন্দা নিতাই নিজের ভরাটের কথা কৌশলে স্বীকার না করলেও গোলাম মোস্তফাসহ বেশ কয়েক জন আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ওই দিঘিটি ভরাট করছে বলে জানান। তিনি আরো জানান ওই দিঘিটির উত্তর পাশে একটি বিশাল সরকারি হালট ছিলো যা বর্তমানে ক্ষমতাশীনরা দখল করে বাসাবাড়ি নির্মাণ করেছে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অভিষেক দাশ কুমিল্লা এসডি নিউজ কে বলেন, পুকুর বা দিঘি ভরাটের বিষয়ে কেউ আমাদের জানালে আমরা খোঁজ নিয়ে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। তবে রায় দিঘি ভরাটের বিষয়ে আমাকে কেউ লিখিত ভাবে জানায়নি। আর দিঘির পরিবেশ রক্ষার্থে মামলার বিষয়টিও আমার জানা নেই। তার পরেও আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি যদি কেউ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে এবং দিঘি ভরাট করার চেষ্টা করে। তাহলে অবশ্যই ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
error: ধন্যবাদ!