স্বকৃত গালিব,কুবি প্রতিনিধি :
করোনা মহামারির প্রভাবে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষামন্ত্রালয়।এর পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনিষ্ট কালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে বন্ধ ঘোষণা করে।
পরবর্তীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা প্রোতিষ্ঠান গুলো সেপ্টম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার ইঙ্গিত দেয়। তবে বন্ধ সময়ে যে শিক্ষার্থীরা মেসে থাকতেন তাদের অনেকেই ভাড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে এমনই দুশ্চিন্তার কথা জানা গেছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে পরিবারের পক্ষ থেকে মেসের ভাড়া দেওয়া কঠিন। আর যারা টিউশনি করে চলতাম কিন্তু এখন তো বসে আছি কীভাবে মেস ভাড়া দিবো। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা না থাকায়, শিক্ষার্থীরা কুমিল্লা শহর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় মেসে থাকেন। কেউ কেউ বাসা বাড়ির রুম ভাড়া নিয়েও থাকেন।
কিন্তু করোনা ভাইরাসের এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ গ্রামের বাসায় অবস্থান করছেন। তবে শিক্ষার্থীরা বাসায় অবস্থান করেও মেস ভাড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন।
কেননা মেস মালিক ও বাসার মালিক ফোন করে ও খুদে বার্তা পাঠিয়ে ভাড়া পরিশোধের কথা বলছেন। যা অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে!বিশেষ করে যে শিক্ষার্থীরা পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে টিউশনি করে চলতেন তারাও বিপাকে পড়েছেন। যদিও এই করোনা পরিস্থিতি কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে তা অনিশ্চিত।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী কামাল হোসেন জয় বলেন, আমি কৃষক পরিবারের সন্তান। উৎপাদিত ফসলের টাকায় চলি। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে মেস মালিক যোগাযোগ করেছেন ভাড়া প্রদানের জন্য যা দুশ্চিন্তার বিষয়।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার বলেন, আমি টিউশনি করে নিজের খরচ বহন করতাম। আর মেসে থেকেই পড়াশোনা করছি। তবে এখন মেস মালিক জানিয়েছেন ভাড়া দিতে কিন্তু কীভাবে ভাড়া দিবো সেটাই বুঝছি না।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়,করোনার আতঙ্কে টিউশনি বন্ধ হয়ে যাওয়া ও বিশ্ববিদ্যালয় অনিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছি।এর মধ্যেই মেস মালিক গণ মেস ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ বলেন,ইতিমধ্যেই যে সব শিক্ষার্থী মেস ভাড়ার বিষয়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছে,তাদের সমস্যা আমরা সমাধান করে দিয়েছি।তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই অবস্থায় মেস ভাড়া পরিশোধ না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন,বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও মেস মালিকদের সাথে করে সমস্যা সমাধানের ব্যাবস্থা করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী ফায়সাল মেসের মালিক হারুনার রশিদ সহ কয়েকজন মেস মালিক বলেন,যে সকল শিক্ষার্থী অসচ্ছল ও টিউশনি করে চলে তারা যদি অর্থ ছাড় দেওয়ার জন্য বলে, তাহলে বিবেচনা করে কিছু টাকা ছাড় দিব।তবে আমরাও মেসের ভাড়ার টাকা দিয়ে সংসার চলায়,তাই আমাদের বিষয়টাও সবাইকে বিবেচনা করার আহ্বান জানান।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী কামাল বলেন,করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী যেন মেস ভাড়া পরিশোধ না করে।আর করোনা পরিস্থিতির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হলে জেলা প্রশাসক ও কুমিল্লা সিটি মেয়রের সাথে কথা বলে মেস ভাড়া মৌকুফের জন্য মেস মালিকদের সাথে কথা বলা হবে।