নিজস্ব প্রতিবেদক :
শহরতলীর নেউরা গরু বাজার। কুমিল্লার সর্ববৃহৎ কোরবানির পশুর হাট হিসেবে পরিচিত। বিশাল এ বাজারটি বসে সম্পূর্ণ সড়কের উপর। তাই আশপাশের ১১টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতসহ নিয়মিত চলাচল সমস্যা হয়। ইপিজেড, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল ও শহরের প্রবেশে সমস্যা সড়কে এ গরু বাজার। নেউরা গরু বাজার সড়ক থেকে বিমান বন্দর খালি মাঠে স্থানান্তর করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সূত্র জানায়, রাজগঞ্জ, কান্দিরপাড়, চকবাজার, টমছমব্রিজ, শহরের সকল প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক ঢুলিপাড়া নেউরা হয়ে দিশাবন্দ সড়ক। এ সড়কে ঢুলিপাড়া, নেউরা, রসুলপুর, সৈয়দপুর, নোয়াপাড়া, রাজাপাড়া, দিশাবন্দ, লক্ষীনগর, কাজীপাড়া, আবাসন প্রকল্প, লইপুরা গ্রামের মানুষের শহরে প্রবেশের একমাত্র পথ।
এছাড়া দক্ষিণ কুমিল্লার সঙ্গে নগরী ও আদর্শ সদর উপজেলা থেকে সদর দক্ষিণে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাও নেউরা সড়ক। ঈদ-উল আযহার পূর্বে ধারাবাহিক ভাবে এ সড়কে গরু বাজার চলে কয়েকদিন। এতে মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে।
ইপিজেডের কর্মী নাদিয়া বেগম জানান, রাজাপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকি। বাসা থেকে ইপিজেড পকেট গেইট আসতে পাঁচ টাকা ভাড়া লাগে। যখন এখানে গরু বাজার থাকে তখন দিশাবন্দ-উনাইশার হয়ে ২নং গেইটে বা দিশাবন্দ-কাজীপাড়া-জাঙ্গালিয়া, টমছমব্রিজ হয়ে ১নং গেইটে আসতে হয়। দেখা যায় তখন ভাড়া ৩০ টাকা চলে যায়। অনেক সময় নষ্ট হয়, টাকাও যায়। ইপিজেড গেইটে বাজার হলে আমাদের কষ্ট বাড়ে।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন বলেন, গরু বাজারের সময় আবর্জনা, দুর্গন্ধের ফলে এলাকায় বসবাস ও এ রাস্তায় যাতায়াত করতে অনেক কষ্ট হয়। বাজার কমিটি পরিষ্কারের কাজটুকুও করেন না। বাজার চলাকালীন সময়ে দুই দিকে লাঠিয়াল বাহিনী থাকে যারা গাড়ি চলাচলে বাধা দেয়, রাস্তা বন্ধ করে। এখানে বাজার রাখার কোন দরকার নেই।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জাকির হোসেন বলেন, এ বিষয়ে বাজার কমিটির সঙ্গে কয়েকবার আলোচনা করেছি। বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছেন না। পরামর্শ দিয়েছি, নেউরা গরু বাজার থেকে আধা কিলো দক্ষিণে পুরাতন বিমান বন্দর মাঠ খালি আছে। এখানে বাজারটা করলে আরো জমজমাট হবে। মানুষও কষ্ট থেকে বাঁচবে। আমার ১৯ নং ওয়ার্ডে অনেক করোনা রোগী আছে। জরুরি প্রয়োজনে তাদের হাসপাতাল নিতে সমস্যা হবে।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ইউএনও মিয়া মোহাম্মদ কেয়াম উদ্দিন বলেন, বাজারটি উপজেলার না। এটি সিটি কর্পোরেশন এরিয়াতে অবস্থিত। এ বছর সদর দক্ষিণে স্থায়ী- অস্থায়ী মিলে মোট ২০টি পশুর হাট বসবে। যার মধ্যে নেউরা বাজার নেই। বিগত বছরগুলোর তালিকায়ও নেউরা বাজার ছিলো না।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর শওকত হোসেন জানান, নেউরা গরু বাজারের ইজারা সিটি কর্পোরেশন থেকে দেয়া হয়নি। এটি অবৈধ বাজার। সিটি কর্পোরেশনের অধীনে বৈধ বাজার হলো চকবাজার, চাঙ্গিনী ও চৌয়ারা বাজার। প্রতি বছর নেউরা সড়কে গরু বাজার বসিয়ে তারা মানুষের ভোগান্তি তৈরি করে। শুধু তাই নয়, গরু বাজারের কয়েক টন বর্জ্য বাজার শেষে তারা সড়কের পাশে রেখে চলে যায়। এতে মানুষ রোগাক্রান্ত হয়। টন টন বর্জ্য আমাদের পরিষ্কার করতে হয়।