কুমিল্লা জেলাজুড়ে ২৪ ঘন্টায় করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৬ জন। বুধবার (১০ জুন) থেকে বৃহস্পতিবার (১১ জুন) পর্যন্ত এসব মৃত্যু হয়।
বুধবার (১০ জুন) সকালে নগরীর ২১ নং ওয়ার্ডের ইপিজেড গেট সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। কুমিল্লা মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপুর মানবিক সংগঠন “ বিবেক” এই মরদেহের দাফন সম্পন্ন করেন। এটা বিবেকের ১১তম দাফন কার্যক্রম ।
একই দিন সকালে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নে করোনা উপসর্গ নিয়ে বাজারের সৈয়দ লাইব্রেরীর মালিক পুস্তক বিক্রেতা সৈয়দ আব্দুল আজিজ (৫০) মারা যান। সকাল সাড়ে ১০ টায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
সৈয়দ আব্দুল আজিজ ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের বালিনা গ্রামের সৈয়দ বাড়ির মৃত সৈয়দ আবিদ হোসেনের ছেলে। এছাড়া কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরো ৬ জন।
এদিকে কুমিল্লা জেলায় প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, ঘটছে প্রাণহানি। এরই মধ্যে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকাসহ জেলার ১৭টি উপজেলায়
কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬০৪ জনে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকা মৃত্যুও ছাড়িয়ে গেছে অর্ধশত (অন্তত ৬০ জন)।
এ ছাড়া প্রতিদিনই করোনা সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে একাধিক মৃত্যুর তথ্য মিলছে কুমিল্লায়। সবশেষ বুধবার (১০ জুন) কুমিল্লায় ৮৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এ দিন জেলায় করোনার সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে মারা যায় চারজন। তার আগের দিন মঙ্গলবার কুমিল্লায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৮। সংক্রমণ-উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, মূলত গেলো ১০ দিন যাবৎ কুমিল্লায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে ঘটছে প্রাণহানিও। জেলা সিভিল কার্যালয়ের কার্যালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বুধবার পর্যন্ত কুমিল্লা জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬০৪ জন।
এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৯ জন। অবশ্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রদত্ত মৃত্যুর এ তালিকা ছাড়াও আরো অন্তত ১২ থেকে ১৫ জনের মৃত্যুর তথ্য মিলেছে এ জেলায়। যাদের অনেকে কুমিল্লায় আক্রান্ত হয়ে জেলার বাইরে মারা গেছেন; আবার অনেকে জেলার বাইরে থেকে আক্রান্ত হয়ে কুমিল্লায় এসে মারা গেছে।