মেয়র সাক্কু কে বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দিবেন না কায়সার

নিজস্ব প্রতিবেদক :

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর পথের কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজামুদ্দিন কায়সার।

বিগত দুটি কুসিক নির্বাচনে নিজ দলের পক্ষ থেকে বিরোধী কোন প্রার্থী না থাকায় সাক্কু অনায়াসেই বিএনপির ভোট ব্যাংক এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সমর্থন পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু আসছে কুসিকের তৃতীয় দফার নির্বাচনে সাক্কুর শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দি হিসেবে এবার প্রার্থী হয়েছেন স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা নিজামুদ্দিন কায়সার। এতে এবার নির্বাচনী বৈতরনী পাড় হওয়া সাক্কুর জন্য অনেকটাই কঠিন হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এদিকে আসন্ন কুসিক নির্বাচনে বিএনপির এ দুই প্রার্থীই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন। উভয় প্রার্থীই কর্মী সমর্থকদেরকে নিয়ে নির্বাচনের কৌশল নির্ধারণ করছেন।

জানা যায়, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুটি ভাগে বিভক্ত। দীর্ঘ কয়েক যুগ যাবত বিএনপির এ গ্রুপিং প্রকাশ্যেই। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সংসদ সদস্য হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন দলের বড় একটি অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর কুসিক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু অপর অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন।

বিগত কুসিক নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় ইয়াছিন গ্রুপ সাক্কুর পক্ষেই কাজ করেছে। এতে সাক্কুর নির্বাচনী বৈতরনী পাড় হওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে ইয়াছিন গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ড কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজামুদ্দিন কায়সার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এতে সাক্কু শিবির অনেকটাই চিন্তিত হয়ে পড়েছে বলে দাবি বিএনপি নেতাকর্মীদের।

বিএনপি নেতাকর্মীরা জানায়, ইয়াছিন গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ড নিজামুদ্দিন কায়সারের নেতৃত্বেই বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছে। কায়সার প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ নেতৃত্ব দিয়েই কুমিল্লা বিএনপির এবং অঙ্গ সংগঠনের সকল কার্যক্রম তথা সরকার বিরোধী সকল কর্মসূচির বাস্তবায়ন করছে। আসছে কুসিক নির্বাচনে তৃণমুলের সিংহভাগ নেতাকর্মী নিজামুদ্দিন কায়সারকে নিয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত কায়সার নির্বাচনের মাঠে বহাল তবিয়্যতে থাকলে সাক্কু চ্যালেঞ্জ নিয়ে কতদুর এগিয়ে যেতে পারবে সেটা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এদিকে মেয়র সাক্কুও দলের নেতাকর্মীদেরকে পাশে টানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সম্প্রতি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নেতিবাচক সমালোচনা করে তিনি কেন্দ্রীয় পদ হারানোর পর স্থানীয় বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছেও ইমেজ সংকটে রয়েছেন। সব মিলিয়ে কায়সারের প্রার্থীতা সাক্কুর পথের কাটা বলে মনে করছে বিশ্লেষক মহল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপি, যুবদল এবং ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতা বলেন, বিএনপি দলীয় ভাবে এ নির্বাচনে অংশ গ্রহন না করায় আমরা প্রকাশ্য কোন পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারছি না। তবে এবারের কুসিক নির্বাচনে দলের সিংহভাগ নেতাকর্মী নিজামুদ্দিন কায়সারের পক্ষেই কাজ করবে। কারণ নেতাকর্মীদের চরম দু:সময়ে হাজী ইয়াছিন এবং কায়সারকেই আমরা পাশে পেয়েছি।

কুসিক নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজামুদ্দিন কায়সার বলেন, আমি জানি ইভিএম একটি কারচুপির যন্ত্র, বিএনপি দলীয়ভাবে এ নির্বাচন বর্জন করেছে, আমি নিজেও বিএনপির এ সিদ্ধান্তকে নীতিগত ভাবে সমর্থন করি, আমার দাবি ইভিএমে নয়, ব্যালটের মাধ্যমেই এ নির্বাচন করা হোক।

তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনে ধানের শীষ নিয়ে সাক্কু বিজয়ী হয়ে সরকার দলের সঙ্গে আতাঁত করে বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে মামলা হামলা এবং হয়রানী করেছে, তাই দলীয় নেতাকর্মীদের জোড়ালো দাবির প্রেক্ষিতেই আমি প্রার্থী হয়েছি। যদি সুষ্ঠু‚ অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় আমার বিশ্বাস বিএনপির ভোট ব্যাংকের সমর্থন নিয়ে আমি সফল হতে পারবো।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, আমার বিপক্ষে কে নির্বাচন করলো সেটা আমার দেখার বিষয় না, নিজামুদ্দিন কায়সারকে আমি আমার প্রতিদ্বন্দ্বি মনে করি না। নগরবাসী তথা আমার কর্মী-সমর্থকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিত্বেই আমি ভোটে অংশ গ্রহন করছি। নগরবাসী আমার বিগত দিনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বিবেচনায় নিয়ে আশা করি আমাকেই ফের তাদের নগরের দায়িত্ব দেবেন বলে আমি আশাবাদী।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
error: ধন্যবাদ!