কুমিল্লায় অযৌক্তিক বিদ্যুৎ বিলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গ্রাহকরা

বিদ্যুতের অযৌক্তিক বিলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কুমিল্লার গ্রাহকরা। তাদের অ’ভিযোগ, মিটার রিডাররা বাসায় গিয়ে মিটার দেখে বিল করেন না। মুন্সেফ কোয়ার্টার এলাকার বাসিন্দা আরিফুল ই’সলাম জানান, তার নতুন মিটারে আগে মিটার রিডিং ছিল ১৬২, এবার ২৪ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত রিডিং দেয়া হয় ২১৬২ ইউনিট।

গতবারের বিল ছিল ১২২২ টাকা, তা এক লাফে বেড়ে ২১৩৪১ টাকা হয়েছে। মিটার রিডারকে ডেকে আনার পর তিনি জানান, রিডিং যা তাই লিখেছি। হয়তো মিটারে স’মস্যা আছে। এটা সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ার বলতে পারবেন।

বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারি-কর্মক’র্তাদের ব্যবহার নিয়েও অ’ভিযোগ গ্রাহকদের। অনেকে বিদ্যুৎ অফিসে এই ভৌতিক বিলের অ’ভিযোগ দিলেও আবার কেউ কেউ সময় এবং অতিরিক্ত টাকা খরচের আশঙ্কায় অ’ভিযোগ দিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। সারা দেশের মতো জে’লার অন্য উপজে’লাগুলোতেও বিদ্যুৎ গ্রাহকদেরও বিলের এমন অ’ভিযোগ রয়েছে।

অনেকের অ’ভিযোগ, মিটার টেম্পারিং করা থাকে। এ কাজটা কর্মক’র্তারাই করেন। ক’রোনার কারণে অধিকাংশ মানুষের রোজকার ব’ন্ধ। এখন এ আকাশ কুসুম বিল দেখে তাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। ক’রোনা ভা’ইরাসের প্রার্দুভাবের কারণে তিনমাস সরকার ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত তিন মাসের আবাসিক গ্রাহকের বিদ্যুতের বিল নেওয়া ব’ন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিল সরকার।

কিন্তু তিনমাস পর এই ৫-১০ গুন বিল আসায় ক্ষু’ব্ধ গ্রাহকরা। বিল সংশো’ধনের জন্য অফিসে গিয়ে হ’য়রানির হচ্ছেন। বিল সং’শোধনের জন্য অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে বলেও অ’ভিযোগ গ্রাহকদের।

এদিকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে জ’ড়িতদের বি’রুদ্ধে শা’স্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ জন্য একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ‘টাস্কফোর্স’ গঠন করা হয়েছ। জ’ড়িতদের শা’স্তির আওতায় আনতে কাজ করবে টাস্কফোর্স। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সভাপতিত্বে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, কুমিল্লা বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর অধীনে মিটার রিডার মাত্র ১৮ জন। অ’তিরিক্ত বিলের বিষয়ে নাম প্রকাশে অ’নিচ্ছুক একজন মিটার রিডার জানান, মিটারের সমস্যার কারণে এমন হতে পারে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিরিয়ার ভাল বলতে পারবেন। তিনি মিটার দেখেই বিল তৈরি করেন বলে জানান।

গ্রাহকরা বলছেন, মিটার রিডাররা বাসায় গিয়ে রিডিং দেখে বিল করে না। ফলে বাড়তি বিলের সমন্বয় কীভাবে করা হবে সেটা স্পষ্ট না। বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারি-কর্মক’র্তাদের ব্যবহার নিয়েও অ’ভিযোগ তাদের। সব শপিংমল গত ৩ মাস ব’ন্ধ থাকলেও বিল দেখে চক্ষুচড়ক গাছ।

কান্দিরপাড়ের আনন্দ সিটি সেন্টারের নিচতলার ব্যবসায়ী জনি আলম। তিনি ফ্যাশন হাউস স্বপ্নযাত্রার কর্নধার। তিনি জানান, ক’রোনার কারণে প্রায় ৩ মাস দোকান ব’ন্ধ ছিল। সম্প্রতি বিল দিয়ে যায় মিটার রিডার। আগে প্রতিমাসে যেখানে বিল আসত ২৭০০-৩০০০ টাকা এখন দুই মাসেই বিল দেয়া হয়েছে ৬৭৯৫ টাকা।

আরো অনেক ব্যবসায়ীই এমন অ’ভিযোগ করেছেন। পু’লিশ লাইন রোডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মাহমুদুল হাসান বাবু জানান, অন্য মাসে তার বাসায় বিদ্যুত বিল আসত গড়ে ৩ হাজার টাকা, অথচ এবার বিল দেয়া হয়েছে প্রায় ৭ হাজার টাকা। একই অভিযোগ করেন রেইসকোর্স এলাকার এডভোকেট সাইফুল ই’সলাম।

সরেজমিন, নগরীর শাসনগাছা বিদ্যুৎ বিতরণ অফিসে একাধিকবার গিয়ে অধিকাংশ কর্মক’র্তা-কর্মচারীকে নিজ টেবিলে পাওয়া যায়নি, তবে তাদের সিলিং ফ্যান চালু ছিল। যারা উপস্থিত ছিলেন তারাও গ্রাহকদের সাথে মার্জিত ব্যবহার করেননি এবং কোন গ্রাহকের স’মস্যার স’মাধান দিতে পারেননি।

উর্ধ্বতন কোন কর্মক’র্তাকে টেবিলে পাওয়া যায় নি। অফিসের ডেকোরেশনে আধুনিকতার ছাপ দেখা গেলেও তাদের কর্মকান্ডে তা সম্পূর্ন বিপরীত। অ’ভিযোগ জানাতে আসা গ্রাহকরা হ’তাশ হয়ে ফিরে গেছেন। তবে অফিসের বাহিরে ক্যান্টিনে তাদের আড্ডা দিতে দেখা যায়।

কুমিল্লার বার্তা

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
error: ধন্যবাদ!