কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাংলার বাহারি পিঠা। একসময় পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় ছোট- বড় সকলেই পিঠা খাওয়ার আনন্দে মেতে উঠত।
কিন্তু এখন তা আর চোখে পড়েনা। কর্মচাঞ্চল্য এই ব্যস্তময় জীবনের গর্ভে তা এখন হারিয়ে যাচ্ছে। যতই শীত বাড়ে ততই যেন মানুষের পিঠা বানানোর ব্যস্ততা বেড়েই চলত।
শীতকাল আসলে গ্রাম-গঞ্জে, ফুটপাত হতে শুরু করে প্রতিটি ঘরে ঘরে পিঠা বানানোর ব্যস্ততা বেড়ে যেত। বাহারি রকমের পিঠা তৈরির উৎসবে আত্মহারা হত সর্বস্তরের মানুষ। শীতের এই সময়ে ভোলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতি ঘরেই চিতল, দুধচিতল, পুলি, নকশি, পাটিসাপটা, ভাপা,পাখন, তেলে ও গোটা পিঠাসহ হরেক রকমের পিঠা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন গৃহিণীরা।
কিন্তু কালের বিবর্তনে ও কর্মচাঞ্চল্যের কারণে এ এলাকার মানুষ এখন বাড়িতে পিঠা তৈরির সেই উৎসবমুখর আমেজ হারিয়েছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রা বদলে যাচ্ছে অনেক।
কালের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের গ্রামীন সংস্কৃতিগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। নুরনাহার বেগম বলেন, শীত আসলে আগে কত ধরণের পিঠা বানাতাম। সারারাত বসে ঢেঁকিতে চাল গুড়া করতাম এবং ভোরে উঠে পিঠা বানাতাম সবাই মিলে।
ছেলে মেয়েরা আনন্দের সঙ্গে পিঠা খেয়ে স্কুলে চলে যেত। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে পিঠা তৈরি হয় না। আগের সেই পিঠা বানানোর আমেজ হারিয়ে গেছে অনেকদিন আগে।
এখন সবাই পিঠা বাজার থেকে কিনে এনে খায়। এতে কোনো আনন্দ- উৎসাহ থাকে না।
গ্রামের গৃহিণীদের মধ্যে আগের মত পিঠা বানাননোর উৎসব নেই। হরেক রকমের পিঠ আমাদের নতুন প্রজন্ম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। তাই পিঠা বানানোটা এখন স্মৃতি হয়ে গেছে।