নিজস্ব প্রতিবেদক :
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ‘ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত ও সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প- ২য় পর্যায়’- এর এক অবহিতকরণ সভা গত ১০ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা জেলাপ্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, কুমিল্লা আঞ্চলিক কার্যালয় আয়োজিত এ অবহিতকরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (সার্বিক) মো: শাহাদাত হোসেন।
প্রথমেই গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে সভার শুভ সূচনা করেন পন্ডিত বাসুদেব চক্রবর্তী। প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে প্রথমেই বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা অঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক পরিমল মন্ডল। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের পুরোহিত ও সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকল্পে সূচিত এ প্রকল্পের ১ম পর্যায় ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত চলমান ছিল। তখন ২৫,৫৮১জন পুরোহিত ও সেবাইতকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ১ম পর্যায়ের সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে প্রকল্পের ২য় পর্যায়ের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে, যা ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে। এ পর্যায়ে ৩৮,৪০০জন পুরোহিত ও সেবাইতকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। পুরোহিতদের প্রশিক্ষণের বিষয় হচ্ছে হিন্দু আইন ও পূজা পদ্ধতি, ভূমি আইন, আইসিটি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং খাদ্যপুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবা। সেবাইতদের প্রশিক্ষণের বিষয় হচ্ছে সামাজিক মূল্যবোধ, কৃষি ও বনায়ন এবং গবাদি পশু পালন।
অবহিতকরণ সভায় প্রকল্পের সফলতা কামনা করে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস, আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিয়া আফরিন, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নিস্বর্গ মেরাজ চৌধুরী, শ্রীকাইল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শ্যামা প্রসাদ ভট্টাচার্য্য, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক গোলাম রায়হান, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কুমিল্লার উপ পরিচালক সারোয়ার আলম, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল মান্নান, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান খান, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা চন্দন কুমার পোদ্দার ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি চন্দন কুমার রায়। পুরো সভা সঞ্চালনা করেন লিটন সরকার।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, কুমিল্লা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল স্থান। গত দূর্গা পূজায় যা ঘটেছে তা নিছক একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারও করা হয়েছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কুমিল্লার জনগণ এ ঘটনার নিন্দায় মুখর হয়েছে। সকল ধর্মের মূল সুর এক, আর তা হচ্ছে মানুষের কল্যাণ। হিন্দু ধর্মের পুরোহিত ও সেবাইতদের ধর্মের সেই মর্ম কথা উপলব্ধি করে তা সর্বসাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। ইমাম-পুরোহিতরা এক সময় সমাজে যে শ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন, সেই সম্মানিত স্থানে তাঁদের আবার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। পুরোহিত-সেবাইতদের সামাজিক মূল্যবোধ ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার পাশাপাশি তাঁদের আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করতে হবে।