বুড়িচং (কুমিল্লা) প্রতিনিধি :
নি¤œচাপ জাওয়াদের প্রভাবে সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় একটানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে শত শত একরের ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে যায়। এতে শীতকালীন বিভিন্ন প্রকারের তরিতরকারী, শাকসব্জিসহ আলু’র ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা এ সময় জমিতে থাকা পানি নিস্কাশনে ড্রেন নির্মানসহ নানাভাবে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। কুষি নির্ভর এই উপজেলাটির প্রায় প্রতিটি গ্রামেই বারো মাস নানা প্রকারের শাকসাব্জ,তরিতরকারী উৎপাদন হয়।
সরেজমিন ঘুরে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের মিথলমা, কাঁকিয়ারচর, আবিদপুর, নিমসার, পাঁচকিত্তা, কোরপাই, ভারেল্লা, কংশনগর, ময়নামতি, শাহদৌলতপুর, কালাকচুয়া, ফরিজপুর, রামপাল, সমেষপুরসহ বিভিন্ন গ্রামগুলো তে বারো মাসই কৃষকরা ধান, আলুছাড়াও বিভিন্ন প্রকারের শাকসব্জি চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে।
নি¤œচাপ জাওয়াদের কারণে নারাদেশের ন্যায় কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায়ও গত তিন দিন টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে জলাবদ্ধতা সৃষ্ট হয়ে শত শত একর জমির ধান, আলুর পাশাপাশি বিভিন্ন পকারের শাকসব্জি পানিতে তলিয়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কথা হয় মোকাম ইউনিয়নের মিথলমা গ্রামের জহিরের সাথে ।
তিনি জানান, এবার প্রায় ৫০ শতক জমিতে তিনি আলু চাষ করেছিলেন। এছাড়াও বেশ কিছু জায়গাজুড়ে রোপন করেছিলেন লাল শাক,ধনে পাতা। বৃষ্টিতে সব পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। একইভাবে, ওই গ্রামের সামাদ, আলম, রশিদ, ইবরা, লতিফ, ফারুক ধান, আলু, লাউ, শীম, মিষ্টিকুমড়া, লালশাক, পুঁইশাক, ফুল কফি, বাধা কপি, বরবটি, চিচিংগাসহ বিভিন্ন প্রকারের তরিতরকারীর চাষ করেছিলেন।
একটানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় সকলের জমির ফসলই পানির নীচে তলিয়ে যাওয়া চরম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। একই অবস্থা অন্যান্য গ্রামগুলোতেও। ফলে কৃষকরা তাদের জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন। ময়নামতির সমেষপুর গ্রামের শাহিন, হরিণধরার জাহাঙ্গীর, বাজেবাহেরচরের কৃষ্ণ, সিন্দুরিয়াপাড়ার শাহজালাল প্রমুখও জানান, টানা বৃষ্টিতে তাদের ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়াও বুড়িচং উপজেলার সদর, রাজাপুর,বাকশীমুলসহ সবগুলো ইউনিয়নের ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা থেকে জমি রক্ষায় এ সময় উল্লেখিত গ্রামগুলোর কৃষকদের জমিতে নালা করে পানি নিস্কাশনের আপ্রান চেষ্টা করতে দেখা গেছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোসাম্মৎ আফরিনা আক্তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করে জানান, আমরা প্রাথমিকভাবে ৬’শ ৯০ হেক্টর আলু, ৬২ হেক্টর সরিষা, শাকসব্জি ৫’শ ২০ হেক্টর, মিষ্টি আলু ২৫ হেক্টর, ডাল জাতীয় ১৫ হেক্টর, বোরো বীজতলা ৩৫ হেক্টর, ভূট্টা ৭ হেক্টর, পেয়াজ দেড় হেক্টর, রসুন ২ হেক্টর সূর্যমুখী আড়াই হেক্টর, গম ৬ হেক্টর ও চিনাবাদাম ২ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হওয়ার বিষয়টি নিরুপন করেছি।