অনলাইন ডেস্ক :
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে মঙ্গবার থেকে দেশজুড়ে সীমিত পরিসরে ‘লকডাউন’ শুরু হয়েছে। তিন দিনের এ লকডাউনে রিকশা ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ধাকলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার অংশে দেখা গেছে এর উল্টো চিত্র।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যাত্রী বহন করে চলে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যান ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা। যাত্রীদের অভিযোগ ছিল পরিবহন চালাক ও হেলপাররা লকডাউনের দোহায় দিয়ে আদায় করেছেন তিন থেকে চার গুণ অতিরিক্ত ভাড়া। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা নেই এসব পরিবহনে।
মঙ্গবার (২৯ জুন) দুপুরে মহাসড়কের কুমিল্লার বিভিন্ন ষ্ট্যান্ড গুলোতে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমিল্লার চান্দিনা, ক্যান্টনমেন্ট, চৌদ্দগ্রাম থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর জেলা মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যান ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়কে কেন নামানো হয়েছে পরিবহন এমন প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, হাইওয়ে পুলিশকে নির্দিষ্ট পরিমান চাঁদা দিয়েই তারা সড়কে গাড়ি চালাচ্ছেন। তবে এসব পরিবহনে শারীরিক দূরত্ব, মুখে মাস্কপড়াসহ কোন প্রকার স্বাস্থ্য মানতে দেখা যায়নি।
চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে গাদাগাদি করে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে মাইক্রোবাসগুলো। আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত প্রতি যাত্রীকে গুনতে হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। এ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক যাত্রী। আর সিএনজি চালিত অটোরিকশা যাচ্ছেন ফেনীর মহিপাল পর্যন্ত। তারা জনপ্রতি ২০০টাকা করে যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। আর চৌদ্দগ্রাম পর্যন্ত নিচ্ছেন ১০০টাকা করে।
কথা হয় চট্টগ্রামগামী খাইরুল এনাম নামে ওষধ কোম্পানীর এক বিক্রয় প্রতিনিধির সাথে। তিনি জানান, ‘সড়কে গণপরিবহন না থাকায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করে বাধ্য হয়ে গাদাগাধি করে মাইক্রোবাসে ওঠেছেন । ২০০টাকার এখন দিতে হবে ৭০০টাকা। এ নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।’
অপর দিকে এমদাদ, কামাল হোসেন ও সরওয়ার আলাম জানান, তারা যাত্রাবাড়ি থেকে পিকআপ ভ্যানে করে কুমিল্লায় এসেছেন ৫০০টাকা করে। তিন জনের গন্তব্য চাঁদ জেলায়। এবার তারা সেখান থেকে ২ হাজার টাকায় ভাড়া করেছেন একটি প্রাইভেকার।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়কে কেন নামানো হয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে কামাল হোসেন নামে মাইক্রোবাসের এক চালক জানান, মহাসড়কে পুলিশকে চাঁদা দিয়ে তার গাড়ি চালান। যার কারণে সড়কে এদের সমস্যা হয় না।
এ বিষয়ে মিয়া বাজার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামন বলেন, মহাসড়কের সুয়াগাজী থেকে ফেনী সীমান্তের দত্তসার পর্যন্ত সকাল থেকে আমাদের টহল টিম রয়েছে। পন্যবাহী পরিবহন ছাড়া যাত্রীবাহী কোন পরিবহন আমাদের চোখে পড়েনি। চালকদের কাছ থেকে চাঁদা নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন।
ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিছুর রহমান জানান, চাঁদা নেয়ার বিষয়টি সত্য নয়। আগামী কাল থেকে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সূত্র : নতুন কুমিল্লা