কুমিল্লা প্রতিনিধি :
‘সাবেক আইনমন্ত্রী ও কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের এমপি এড.আবদুল মতিন খসরু করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে মারা গেছেন’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমনই গুজব ছড়ানোসহ তাঁকে নিয়ে আপত্তিকর ও মানহানিকর মন্তব্য করার অভিযোগে জেলার বুড়িচং থানায় ৩ জনের বিরুদ্ধে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা হয়েছে। বুড়িচং উপজেলার গাজীপুর গ্রামের আবদুর রশিদ ভূইয়ার পুত্র ও ছাত্রলীগ নেতা মো: আল আমিন ভূইয়া বাদী হয়ে বুধবার রাতে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এর ২৫(১)/ ২৯(১)/৩১(১)/৩৫ ধারায় ওই মামলাটি দায়ের করেন। কুমিল্লা পুলিশ সুপারের নির্দেশে রাতেই মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) প্রেরণ করা হয়। পরে গভীর রাতে ওই মামলার এজাহার নামীয় ২ নং উপজেলার বাকশীমুল গ্রামের শামসুল হকের পুত্র ফরহাদ খান (২৩) এবং ৩ নং আসামী উপজেলার ঘোষনগর গ্রামের মৃত আ: ওয়াহিদের পুত্র মাহফুজ বাবু (৩৩) কে গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতারকৃতদের বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার আদালতে হাজির করার পর আদালত উভয়ের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এসআই পরিমল চন্দ দাস।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত বুধবার ‘সাবিয়া রেহমান’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোষ্ট দেয়া হয় ‘ আমরা অত্যন্ত দু:খের সাথে জানাচ্ছি যে—এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এমপি ৮ দিন করোনার সাথে যুদ্ধ করে ৭ এপ্রিল ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে মারা গেছেন—-’পরে ওই আইডির ফেন্ড লিল্টে থাকা এজাহার নামীয় ২ নং আসামী ফরহাদ খান (Farhad Khan) কমেন্টসে লিখেন ‘ হালায় মরলে তো বালো ছিল, এখন নির্বাচন হলে দেখতেন মানুষের বাড়ি বাড়ি যাইতো’। মামলায় এজাহার নামীয় ৩ নং আসামী মাহফুজ বাবু তার নামের আইডি (মাহফুজ বাবু) দিয়ে লিখেন ‘ইন্নালিল্লাহি ওনার টাকা-পয়সা গুলি এখন গরীরদের বিলিয়ে দিয়ে পাপসাপ মাপ নিয়া দরকার।’
মামলার বাদী মো: আল আমিন ভূইয়া জানান, মামলায় অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজসে ফেসবুকে মিথ্যা গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে জীবিত এমপি মতিন খসরুকে মৃত ঘোষণা দিয়ে তাঁকে সামাজিক, পারিবারিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন। মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আসামী সাবিয়রা রেহমানের আইডির বিষয়ে তদন্ত করে তাকেও গ্রেফতারের দাবি করেছেন তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এসআই পরিমল চন্দ্র দাস জানান, গ্রেফতারকৃতদের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে তারা অভিযোগ স্বীকার করেছে। দুপুরে গ্রেফতারকৃত ফরফাদ ও মাহফুজ বাবুকে আদালতে হাজির করার পর বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করার আদেশ দেন। তিনি আরও জানান, এজাহার নামীয় সাবিয়া রেহমানের নাম ঠিকানা এখনো অজ্ঞাত, তার পরিচয় সনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।