পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জালিয়াতির চেষ্টা: তিনজন রিমান্ডে

কম্পিউটারের মাধ্যমে পাসপোর্টের ঠিকানা পরিবর্তন ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ভুয়া প্রত্যয়নপত্র সংযুক্ত করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জালিয়াতি চেষ্টা করার অভিযোগে গ্রেফতার তিনজনের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

তারা হলেন- মো. মাসুদ মিয়া, মো. কামাল হোসেন ও গোলাম কিবরিয়া। বুধবার (১ জুন) তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম তাদের প্রত্যেকের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মঙ্গলবার (৩১ মে) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে রাজধানীর ফার্মগেট, খিলক্ষেত ও কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে পল্টন মডেল থানা পুলিশ।

বুধবার (১ জুন) পল্টন মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলনে মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. আ. আহাদ বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি জনবান্ধব নাগরিক সেবা হলো পুলিশ ক্লিয়ারেন্স। অনলাইনে ফর্ম পূরণ করে নির্দিষ্ট টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার পর সেবাটি একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেওয়া হয়। নাগরিককে সেবাটি ডিএমপি স্বচ্ছতার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে দিচ্ছে।

যদি কারও বিরুদ্ধে কোনো মামলা থাকে তাহলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সেবাটি সেই ব্যক্তি পাবে না। সেটার ওপর ভিত্তি করে যদি আবেনকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা না থাকে তাহলে পুলিশ সিডিএমএস যাচাই করে আবেদনকারী ব্যক্তিকে দিয়ে দেয়। যদি কারও বিরুদ্ধে মামলা থাকে সেক্ষেত্রে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয় না।

মতিঝিল বিভাগের ডিসি আ. আহাদ বলেন, গত ২০ এপ্রিল আসামি মাসুদ মিয়া পুলিশ কমিশনার বরাবর অনলাইনে একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করেন। যার রেফারেন্স নম্বর-২২০৪১৯৩২৬৫। পুলিশ ক্লিয়ারেন্সটি তদন্তকালে আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত অনলাইন ডকুমেন্ট সন্দেহ হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে গোপনে তদন্ত পরিচালনা করা হয়।

আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত ওয়ার্ড কাউন্সিলের প্রত্যয়নপত্রটি যাচাই করে প্রত্যয়নপত্রটির স্বাক্ষর ও প্রত্যয়নপত্রটি সঠিক নয় বলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর লিখিতভাবে জানান। এর প্রেক্ষিতে গতকাল মো. মাসুদ মিয়াকে ফার্মগেট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মো. কামাল হোসেনকে খিলক্ষেত এলাকা থেকে ও মো. গোলাম কিবরিয়াকে কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামি মাসুদ মিয়ার নামে নরসিংদী জেলার মাধবদী থানায় একাধিক মামলা থাকায় সে বিদেশ যাওয়ার জন্য পল্টন মডেল থানার ঠিকানা ব্যবহার করে। পল্টন মডেল থানা থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সংগ্রহের জন্য কামাল হোসেনকে ৩০ হাজার টাকা চুক্তিতে পাসপোর্ট দেয়। এরপর কামাল হোসেন ২৮ হাজার টাকার চুক্তিতে গোলাম কিবরিয়াকে পাসপোর্ট দেন।

মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, চক্রটি পরস্পর যোগসাজশে মূল পাসপোর্টের তথ্যপাতা স্ক্যান করে জরুরি যোগাযোগের ঠিকানা কম্পিউটারের মাধ্যমে এডিট করে পল্টন মডেল থানার একটি ঠিকানা ব্যবহার করে এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ভুয়া প্রত্যয়নপত্র সংযুক্ত করে। পাসপোর্টধারীর ঠিকানা পরিবর্তন ও এডিট করা পাসপোর্টের ফটোকপিতে জাল সিল ও জাল স্বাক্ষর করে সত্যয়নকারী চিকিৎসকের সিল ও স্বাক্ষর ভুয়া তৈরি করে সত্যায়নপূর্বক পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করে।

আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সনদপত্র, জাল সিল তৈরি করে পাসপোর্টধারীর ঠিকানা পরিবর্তন করে এডিট করা পাসপোর্টের ফটোকপিতে জাল সিল ও স্বাক্ষর করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করে আসছিল।

চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে বিভ্রান্ত করে টাকার বিনিময়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরি করে দেবে বলে প্রতারণা করছিল। চক্রটি কিছুদিন আগে ছয়টি ভুয়া আবেদন করেছিল, যা পল্টন থানা রিজেক্ট করে।

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
error: ধন্যবাদ!