মাদকের গন্তব্য অজানা

অনলাইন ডেস্ক : দায়ের হওয়া সিংহভাগ মাদক মামলার শেষ গন্তব্য ও ক্রেতা-বিক্রেতার নাম থাকছে অজানা। তদন্তকারী সংস্থাও টিকিটি ছুঁতে পারে না তাদের। ফলে বহনকারীকে একমাত্র আসামি করে দেওয়া হয় বেশির ভাগ মামলার চার্জশিট। তবে মাদক মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একাধিক সংস্থার দাবি, আইনের বাধ্যবাধকতার কারণে মাদক মামলায় পজিশনের (ব্যক্তি ও যে স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়) ভিত্তিতে আসামি করা হয়। পজিশনের বাইরে কাউকে আসামি করতে গেলে তা প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া বহনকারীও দেয় না চালানের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য। তাই বেশির ভাগ মামলায় শুধু বহনকারীকে আসামি করা হয়। চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক বলেন, ‘এখন মাদক চক্রের হোতারা পরিবহনের সময় কিছু কৌশল অবলম্বন করছে।

মাদকের চালান বিক্রেতার কাছ থেকে ক্রেতা পর্যন্ত পৌঁছাতে একাধিক হাত বদল হয়। ফলে চালান আটক হলেও কিছু মামলার তদন্তে চালানের চূড়ান্ত গন্তব্য পর্যন্ত যাওয়া যায় না। তাই ওই সব মামলার চার্জশিটে ক্রেতার নাম ও শেষ গন্তব্য উল্লেখ করা যায় না।’ চট্টগ্রাম মেট্রো মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘চালানসহ বহনকারী গ্রেফতার হলেও অনেক সময় তারা ক্রেতা-বিক্রেতার নাম বলতে চায় না। অনেক বহনকারী আবার কারও নামই জানে না। ফলে পৃষ্ঠপোষক কিংবা গন্তব্যের নাম বলতে পারে না মাদকের বহনকারী। তাই মাদক মামলার কিছু চার্জশিটে ক্রেতা-বিক্রেতা ও গন্তব্য উল্লেখ থাকে না।’

জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় দায়ের হওয়া মামলার সিংহভাগ থাকে মাদক-সংশ্লিষ্ট। দায়ের হওয়া মাদক মামলার বহনকারীকে গ্রেফতার করা হলেও কিছু চালান জব্দ করা হয় পরিত্যক্ত হিসেবে। বহনকারীসহ মাদক চালান জব্দ হলেও বেশির ভাগ তদন্তে বের হয়ে আসে না শেষ গন্তব্য ও ক্রেতা-বিক্রেতার নাম।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, মাদক চক্রের হোতারা চালান পরিবহনে কাট-আউট ও রিলে পদ্ধতি (একাধিক হাতবদল) অনুসরণ করছে। ফলে বহনকারীরা চালান বহন করলেও জানে না এ ক্রেতা-বিক্রেতা এবং শেষ গন্তব্যের ঠিকানা। তাই গ্রেফতার হলেও জিজ্ঞাসাবাদে বলতে পারে না চালানের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য। আবার অনেক আসামির কাছে তথ্য থাকলেও তারা তা প্রকাশ করে না। তাই সিংহভাগ মামলায় শুধু বহনকারীকে একমাত্র আসামি করে চার্জশিট দেওয়া হয়। আর যেসব মাদক পরিত্যক্ত হিসেবে উদ্ধার করা হয়, তাতে সন্দেহজনক কোনো আসামি না থাকলে থানায় জিডি করে আদালতের অনুমতি নিয়ে আলামত ধ্বংস করা হয়। তাই বেশির ভাগ পরিত্যক্ত মাদক উদ্ধারের ঘটনার কোনো মামলা কিংবা তদন্তই হয় না।

মাদকের মামলা নিয়মিত তদন্ত করেন এমন কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারার কারণে মাদক উদ্ধার ‘পজিশন মামলা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কিংবা যার ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, এর বাইরে কাউকে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা যায় না। পজিশনের বাইরে পৃষ্ঠপোষক কিংবা ক্রেতা-বিক্রেতার নাম অন্তর্ভুক্ত করলেও প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই তদন্ত কর্মকর্তারা জোরালো তথ্য-প্রমাণ না পেলে মাদক মামলার চার্জশিটে বহনকারী ছাড়া কাউকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন না। ফলে বেশির ভাগ মাদক মামলার চার্জশিটে শেষ গন্তব্য ও ক্রেতা-বিক্রেতার নাম উল্লেখ করা হয় না।

বিডি-প্রতিদিন

     আরো পড়ুন....

পুরাতন খবরঃ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
error: ধন্যবাদ!